প্লাস্টিক এখন প্রকৃতি ও প্রাণের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এই প্লাস্টিক ছড়িয়ে পড়েছে খাদ্যশৃঙ্খলেও। সর্বশেষ প্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া গেল গর্ভস্থ শিশুর প্লাসেন্টাতে (গর্ভফুল)। এমন ঘটনা এটিই প্রথম।
এনভায়রনমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণাটি পরিচালনার সময় ইতালীয় গবেষকরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে প্রসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। তারা সম্পূর্ণ প্লাস্টিকমুক্ত একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন।
জরায়ুতে ভ্রুণকে পুষ্টি জোগান দেওয়ার এই নালীকে গর্ভফুল, নাড়ি বা অমরাও বলা হয়। মানবদেহে মাইক্রোপ্লাস্টিকের কোনো স্বাস্থ্যগত প্রভাব রয়েছে কি না, তা এখনও বিজ্ঞানীদের কাছে অজানা। তবে তাদের ধারণা, এসব প্লাস্টিক কণা এমন সব রাসায়নিক বহন করতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতির কারণ হতে পারে বা ভ্রুণের বিকাশ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
অমরায় প্লাস্টিক কণার অস্তিত্ব পাওয়ার বিষয়ে বিজ্ঞানীরা বলছেন, কণাগুলো সম্ভবত মায়েরা খাবারের সঙ্গে খেয়ে ফেলেছিলেন বা তাদের নিঃশ্বাসের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করেছে।
এই প্লাস্টিক কণাগুলো চারটি সুস্থ সবল নারীর প্লাসেন্টাতে পাওয়া গেছে। তারা অবশ্য সুস্থ স্বাভাবিক শিশু জন্ম দিয়েছেন কোনো ধরনের সি-সেকশন অস্ত্রোপচার ছাড়াই। প্লাস্টিক কণাগুলো ভ্রূণ এবং মা উভয় অংশের প্লাসেন্টা এবং জরায়ুর ভেতরে যে ঝিল্লির মধ্যে ভ্রূণের বিকাশ ঘটে সেখানেও পাওয়া গেছে।
প্রতিটি প্ল্যাসেন্টার প্রায় ৪ শতাংশ বিশ্লেষণ করে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ প্লাস্টিক কণা পাওয়া গেছে। তার মানে শরীরে এর উপস্থিতি আরও বেশি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। নমুনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, কণাগুলো নীল, লাল, কমলা বা গোলাপী রঙযুক্ত। ফলে বলা যেতে পারে এসব কণা এসেছে প্যাকেজিং, পেইন্টস বা প্রসাধনী এবং ব্যক্তিগত রূপচর্চার বিভিন্ন বস্তু থেকে্
অমরায় পাওয়া মাইক্রোপ্লাস্টিকগুলোর বেশিরভাগই ১০ মাইক্রন আকারের (০.০১ মিমি)। এর অর্থ এগুলো অনায়াসে রক্ত প্রবাহের মধ্যে ঢুকে যেতে পারে। কণাগুলো শিশুর দেহেও প্রবেশ করে থাকতে পারে। অবশ্য গবেষকরা সেটি শনাক্ত করতে পারেননি।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন