পুলিশ কনস্টেবল কাওছারকে ‘মানসিক রোগী’ বলছে পরিবার

পুলিশ কনস্টেবল কাওছারকে ‘মানসিক রোগী’ বলছে পরিবার

বারিধারায় কূটনৈতিকপাড়ায় ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে পুলিশের কনস্টেবল মনিরুল হককে গুলি করে হত্যা করেছেন তারই সহকর্মী কাওছার আলী। ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে এ হত্যাকাণ্ড হয়ে থাকতে পারে পুলিশ কর্মকর্তাদের ধারণা। তবে কাউসারের পরিবারের সদস্যরা বলছেন, চাকরিরত অবস্থায় প্রায় ১৪ বছর ধরে মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত ছিলেন।

তিনি সরকারিভাবে হাসপাতালে গিয়ে মানসিক রোগের চিকিৎসাও নিয়েছেন। অভিযুক্ত কাওসার আহমেদ কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলা সদর ইউনিয়নের দৌলতখালী দাড়েরপাড়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়াত আলী মাস্টারের ছোট ছেলে।

জানা যায়, কাওসার আহমেদ ২০০৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। চাকরি জীবনের বছর পাঁচেক কাটিয়ে ২০১৫ সালের দিকে তিনি মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়। পরে তাকে সরকারিভাবে কয়েকবার পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। চাকরি করা অবস্থায় বেশ কয়েকবার অসুস্থ হলেও তাকে চিকিৎসা করানো হয়।

অভিযুক্ত কাওসার আহমেদ মাদকাসক্ত কিনা জানতে চাইলে পরিবারের সদস্যরা এবং এলাকাবাসী অস্বীকার করে বলেন, তিনি মানসিক রোগে আক্রান্ত। মাঝে মাঝে তিনি অসুস্থ হয়ে যেতেন। মাদকের সঙ্গে তার কোন সম্পৃক্ততা নাই। গত চার-পাঁচ দিন ধরে পরিবারের সঙ্গে কম কথা বলতেন কাওসার বলে তার মা মাবিয়া খাতুন জানান।

তিনি আরও বলেন, আমার ছেলে এমনিতে খুব ভালো। তার মাথায় কিছু সমস্যা আছে। কাওসারের সাথে আমার শনিবার রাত ৮টায় শেষ কথা হয়। আমার সাথে ভালো ভাবেই কথা বলেছে। মা কেমন আছো, আব্বা কেমন আছে জিজ্ঞেস করে। তবে কয়েকদিন ধরে বাড়িতে একটু কম কথা বলতো। পারিবারিক কোন সমস্যা ছিলো না বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে তার স্ত্রী নিলুফার ইয়াসমিন সাথী বলেন, আমার স্বামী মানসিক রোগে আক্রান্ত। সে মাঝে মাঝে অসুস্থ হয়ে যেতো, তাকে কয়েকবার পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়েছে। চিকিৎসার কাগজপত্র আমার স্বামীর কাছে আছে। আমাদের পারিবারিকভাবে কোন সমস্যা ছিল না। তবে সে মানসিক রোগে আক্রান্ত হলে পরিবারের সাথে কম যোগাযোগ করতো এবং কথাও কম বলতো।

এ ব্যাপারে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভেড়ামারা সার্কেল) মহসীন আল মুরাদ জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। উল্লেখ্য, শনিবার (৮ জুন) রাতে বারিধারায় ফিলিস্তিন দূতাবাসের নিরাপত্তার দায়িত্বে অন্যান্য পুলিশ সদস্যের মতো ছিলেন কনস্টেবল মনিরুল এবং কাওসার। রাত পৌনে ১২টার দিকে হঠাৎই সহকর্মী মনিরুলকে নিজের বন্দুক দিয়ে গুলি করেন কনস্টেবল কাওসার। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান মনিরুল।

এসময় হামলাকারীর এলোপাতাড়ি গুলিতে পাশে থাকা জাপান দূতাবাসের গাড়িচালক সাজ্জাদ হোসেন আহত হন। তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পরে আটক করা হয় হামলাকারী কাওসারকে। নিহত মনিরুল ইসলামের বাড়ি নেত্রকোনায়। তার তিন বছরের একটি সন্তান রয়েছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password