আবারও বাড়ল মুরগির দাম

আবারও বাড়ল মুরগির দাম

রাজধানীর বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে  ব্রয়লার মুরগি ও সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। ঈদকে ঘিরে এবার আগে আগেই বাজারে বেড়েছে মুরগির দাম। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদ উপলক্ষে এখন খামারি পর্যায়েই মুরগির দাম বাড়তি, যার কারণে বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। কিছুটা বেড়েছে আলুর দামও।

গরুর মাংস, রসুন, আদা, ভোজ্য তেল, চিনি আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। গত ১৫ মার্চ মুরগিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় ২৯টি পণ্যের দাম সরকারিভাবে নির্ধারণ করে দেওয়ার তিন সপ্তাহেও বাজারে তার প্রতিফলন নেই। বেশি দামেই পণ্য বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর রামপুরা, বাড্ডা, মহাখালী কাঁচাবাজার ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি কেজি ২৩০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয় কেজি ২১০ থেকে ২২০ টাকায়। বর্তমানে রাজধানীর বাজারে তিন ধরনের সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে সোনালি মুরগি কেজি ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা, গত সপ্তাহে যা ছিল ৩১০ থেকে ৩৩০ টাকা।

গরুর মাংসের কেজি ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা। সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী গরুর মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হওয়ার কথা ৬৬৪ টাকায়। ব্রয়লার মুরগি ১৭৫ এবং সোনালি মুরগি ২৬২ টাকায় দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল। রাজধানীর রামপুরা কাঁচাবাজারের জিহাদ ব্রয়লার হাউসের বিক্রেতা বায়োজিদ গতকাল বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে বাজারে মুুরগির দাম বেড়ে গেছে। তাই ব্রয়লার মুরগি এখন ২৪০ টাকার নিচে বিক্রির সুযোগ নেই। অরিজিনাল সোনালি মুরগি কেজি ৩৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।’

কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের মা আয়েশা ব্রয়লার হাউসের ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন  বলেন, ‘মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে এক লাফে মুরগির দাম কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে গেছে। বাড়তি চাহিদার সুযোগে খামারিরা মুরগির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। সরকার নির্ধারিত দামে তো আমরা কিনে আনতেই পারছি না।’ তবে মুরগির দাম আর বাড়ার আশঙ্কা নেই বলেও এই বিক্রেতা জানান।

মহাখালী কাঁচাবাজারে কথা হয় আলী আকবর নামের এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘প্রতিবছর ঈদের দু-এক দিন আগে মুরগির দাম বাড়ে, এবার ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ঈদের এক সপ্তাহ আগেই দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। বাজার তদারকিতে সরকারের জোরালো পদক্ষেপ নেই, তাই চাপে থাকা ভোক্তাদের ওপর আরো চাপ বাড়ছে।’ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের বাড়তি দরেই খুচরা বাজারে চিনি বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি কেজি খোলা চিনি ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে মানভেদে ১০ টাকা কমে কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা হয়েছে। দেশি রসুনের কেজি ১২০-১৪০ টাকা, আমদানীকৃত রসুন ১৯০-২০০ টাকা এবং আদা ২০০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলু কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।

বিভিন্ন ধরনের ডাল, সয়াবিন তেলের দামে কোনো হেরফের নেই। জোয়ারসাহারা বাজারের মেসার্স ভাই ভাই স্টোরের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আলু ছাড়া ঈদ উপলক্ষে এবার পণ্যের দাম তেমন একটা বাড়েনি। উল্টো মসলাজাতীয় পণ্য পেঁয়াজ, দেশি রসুন ও জিরাসহ বিভিন্ন মসলার দাম অনেকটাই কমেছে।’

--সবজির বাজার-- এখন ভোক্তারা সবজির বাজারে গিয়ে অনেকটাই স্বস্তি পাচ্ছেন। বেশির ভাগ সবজি ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে। বেগুন কেজি মানভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা, টমেটো ৪০-৫০ টাকা, ঢেঁরস কেজি ৫০-৬০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৫০-৬০ টাকা, দেশি শসা ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শীতকালীন সবজির শেষদিকে শিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকা। তবে বাজারে আসা সজনের দাম এখনো ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password