সবুজ পাতার আড়ালে সোনালী ধানের সমারোহে উঁকি মারছে বেগুনি পাতার গাছে বেগুনি রঙের ধানের শীষ। রোপনকৃত এ পারপেল লিফ রাইস (বেগুনি ধান) দেখতে তাই জড়ো হচ্ছেন উৎসুক জনতা। বেগুনী রঙের এই ধানের আবাদ করেছেন সাংবাদিক শেখ হেদায়েতুল্লাহ। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা পথচারীরা ভিন্ন রঙের এই ধান দেখতে ভিড় জমান। অনেকেই ক্ষেতের বেড়া টপকে মোবাইল ফোনে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে নিয়ে যান। ধানের শীষ তুলে নিয়ে যান। সে কারণে সার্বক্ষণিক পাহারায় রাখতে হচ্ছে বেগুনি রঙা ধানের জমিটিকে।
জানা গেছে, বেসরকারী একটি সংস্থা গত আমন মৌসুমে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার রুদাঘরায় পরীক্ষা মূলকভাবে এই ধানের আবাদে উৎসাহী করেন চাষীদের। যদিও এই ধান বোরো মৌসুমের। দেশে সর্বপ্রথম এ জাতের ধানের আবাদ শুরু হয়েছিল গাইবান্ধা জেলায়। সৌন্দর্য ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এ ধান। ধানের রঙ সোনালি আভাযুক্ত বেগুনি ও চালের রঙ বেগুনি। উফশী জাতের এ ধানে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ অনেকটাই কম হয়। রোপণ থেকে ধান পাঁকতে সময় লাগে ১৪৫-১৫৫ দিন। অন্য জাতের ধানের চেয়ে এ ধানের একর প্রতি ফলনও বেশ ভালো।
ধানচাষী সাংবাদিক শেখ হেদায়েতুল্লাহ বলেন, দ্যা সালভেশন আর্মি নামক একটি সংস্থার মাধ্যমে এ ধানের বীজ সংগ্রহ করে আবাদ করেছি। ভিন্ন জাতের ধান হওয়ায় মানুষের মাঝে বিশেষ আকর্ষণও তৈরি হয়েছে। ধানের শীষ বেরিয়ে গেছে অনেকে শীষ তুলে নিয়ে যাচ্ছে তাই সার্বক্ষণিক পাহারা দিতে হয়।
তিনি আরো বলেন, এই ধান থেকে আমন ধানের মত বীজ সংরক্ষণ করে আবার সেটি রোপন করা যায়। তাই এবার সব ধান বীজ হিসেবে সংরক্ষণ করা হবে। অনেকে বীজ নিতে যোগাযোগও করছেন। ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে নতুন এই জাতের ধান সঠিকভাবে পরিচর্যা করা যায়। এজন্য পরামর্শ দিয়েছেন।
দ্যা সালভেশন আর্মীর প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডানিয়েল হালদার বলেন, একর প্রতি ফলন ৫৫ থেকে ৬০ মণ হয়ে থাকে। অন্য সব ধানের তুলনায় এ ধান মোটা, তবে পুষ্টিগুণ অনেক। এ চালের ভাত খেতেও সুস্বাদু। ধানের ভাত থেলে ডায়াবেটিস উচ্চ রক্তচাপসহ জটিল রোগের ক্ষেত্রে মেডিসিনের কাজ করে। সে হিসেবে এক মেডিসিনাল রাইসও বলা হয়।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মোসাদ্দেক হোসেন দাবী করেন, বেগুনি রঙের এই ধান বিদেশি নয়। এটি আমাদের দেশি জাতের ধান। আগে অন্য জেলায় চাষ হয়েছে, এবার প্রথমবারের মতো খুলনায় চাষ হচ্ছে। এটি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ।তিনি আরো বলেন, এ ধানে প্রচুর ফাইবার ও ভিটামিন ই থাকায় নিয়মিত এ ধানের ভাত খেলে ক্যান্সার ও হৃদরোগেরও ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন