শাহিনের বাড়ি তো নয়, যেন বিশাল মদের কারখানা

শাহিনের বাড়ি তো নয়, যেন বিশাল মদের কারখানা

এমপি হত্যার প্রধান পরিকল্পনাকারী আখতারুজ্জামান শাহীনের ঢাকার বাসায় মিলল মদের কারখানা। রাজধানীর ভাটারার একটি আবাসিক এলাকায় কোটি টাকার জমি কিনে সেখানে বানাচ্ছেন ভবন। নির্মানাধীন ওই ভবনেই তৈরি হতো মদ। শাহীনের ব্যবসায়ীক সহযোগীদের নিয়ে সেখানে রোজ বসতো বর্ণিল আসরও। এমপি হত্যার পর শাহীন বিদেশ পালিয়ে গেলে সেই মদের কারখানা সিলগালা করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

শাহিনের বাড়ি তো নয়, যেন বিশাল মদের কারখানা। রাজধানীর ভাটারার একটি আবাসিক এলাকায় কোটি টাকার জমি কিনে সেখানে বানাচ্ছেন ভবন। নির্মানাধীন ওই ভবনেই তৈরি হতো মদ। ফ্ল্যাটে কয়েকটা সফা এর পরেই মদের কারখানার জিনিসপত্র। সম্প্রতি অভিযানে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ গোয়েন্দা পুলিশের। মদ তৈরির কাঁচামালে ঠাসা একটি কক্ষ আরেকটি কক্ষে মদ বানর বিভিন্ন কেমিকেল। পাশের আরেকটি কক্ষে সেগুলি বোতল জাত করার যন্ত্র আছে বিদেশ মদের শত শত খালি বোতল। শাহিনের এই মদের কারখানা চালাতো হাজী ম্যানেজার নামের এক ব্যক্তি। সেও এখন পলাতক।

ভবনের দারোয়ান ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এমপি আনার নিখোঁজের ঘটনায় আলোচিত নারী শিলাস্তি রহমান সহ অন্য নারীদের এখানে নিয়ে আসতো শাহীন। রোজরাতে বসতো আসর। নির্মানাধীন বাড়িটির বাহির থেকে কেউ বুজবে না ভেতরে কি চলছে। কারণ দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার ভেতরের দিকে সাজানো হয়েছে দুটি কক্ষ। ভাটারা থানার এলাকায় এবং বারিধারা খুব কাছে আবাসিক এলাকার এই বাড়িটির মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা। সেখানে নির্মিত হচ্ছে ৭ তোলা ভবন। অভিযুক্তা আখতারুজ্জামান শাহীন এই ভবনে থাকতেন না, থাকতেন গুলশানের ফ্ল্যাটে।

গোয়েন্দা পুলিশ বলছে গুলশান ও ভাটারার এই দুই বাসায় বসে পরিকল্পনা হয় এমপি আনার হত্যার। ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার খুনের মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীন নকল বিদেশি মদ তৈরি করে তা গুলশান, বনানী ও বারিধারাসহ ঢাকার অভিজাত এলাকায় বিক্রি করতেন। দীর্ঘদিন ধরে স্বর্ণ চোরাচালান, হুন্ডির পাশাপাশি শাহীন নকল বিদেশি মদের কারবার করতেন। এ জন্য তিনি বসুন্ধরা এ ব্লকের ভাড়াকৃত ফ্ল্যাটে নকল বিদেশি মদের কারখানা গড়ে তোলেন।

এখানে তৈরি নকল বিদেশি মদ গুলশান দুই নম্বরে তার আরেকটি ফ্ল্যাটে রাখতেন। এরপর সেখান থেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সরবরাহ করতেন। প্রসঙ্গত, এমপি আনার খুনের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর গত ২০ মে সকালে শাহীন দিল্লিগামী একটি ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। গত ২২ মে গোয়েন্দা পুলিশ আক্তারুজ্জামান শাহীনকে গ্রেপ্তার করতে তার গুলশান ও বসুন্ধরার ফ্ল্যাটে অভিযান চালায়।

অভিযানকালে তাকে না পেলেও ফ্ল্যাট দুটি থেকে বেশকিছু আলামত জব্দ করে। তারা নকল বিদেশি মদের কারখানা দেখে হতচকিত হয়ে যান। গোয়েন্দা পুলিশের সূত্র বলছে, গুলশানের ফ্ল্যাটে শাহীন রীতিমতো মিনি বার বানিয়ে রেখেছিলেন। ওই ফ্ল্যাটে থরে থরে সাজানো নকল বিদেশি মদ। আর বসুন্ধরার বাসায় অভিযানকালে দেখা যায়, নকল বিদেশি মদ তৈরির নানা কাঁচামাল, মেশিন, বড় বড় জারে ভরা মদ।

এছাড়া ছোট ছোট মদের ড্রামও পাওয়া যায়। মদের অসংখ্য খালি বোতলও রয়েছে ফ্ল্যাটটিতে। কীভাবে এখানে নকল বিদেশি মদের কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে, এর পেছনে শাহীন ছাড়া আর কে কে আছে, তাদের খুঁজছে গোয়েন্দা পুলিশ। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ গতকাল বলেন, আমরা আক্তারুজ্জামান শাহীনের দুটি ফ্ল্যাটই সিলগালা করে দিয়েছি।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password