দখল করা অঞ্চলগুলোতে বৃহস্পতিবার থেকে পূর্বের আইন চালু করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী। ডেইলি টাইমসের এক খবরে বলা হয়েছিল, গত সপ্তাহে খালিফা নামে পরিচিত প্রভাবশালী এক বিদ্রোহী নেতা সিরাজউদ্দিন হাক্কানি দখলকৃত জেলাগুলোতে তাদের পূর্ববর্তী আইন চালুর তাগিদ দেন। সে হিসাবে বিধিবিধান জারির ক্ষেত্রে তাদের জারি করা শাসনের দিকেই প্রত্যাবর্তন করল বিদ্রোহীরা। সরকারি বাহিনীকে টেক্কা দিয়ে আফগানিস্তানের প্রায় ৭০ শতাংশ এলাকা দখল করে নিয়েছে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী। চলতি মাসের শুরুতেই বিদ্রোহীরা আফগানিস্তানের ৪২১টি জেলার মধ্যে ১৫০টির মতো জেলা দখলে নিয়েছে। আরও শতাধিক জেলায় সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তাদের যুদ্ধ চলছে এবং ধারণা করা হচ্ছে শিগগিরই ওই জেলাগুলোও আয়ত্তে আনতে সমর্থ হচ্ছে।
অধিকৃত অঞ্চলগুলোতে পাথর ছুড়ে মৃত্যুদণ্ড, চুরির দায়ে হাত কর্তন, নারীদের একা ঘর থেকে বের হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা এবং পুরুষদের বাধ্যতামূলক দাড়ি রাখার বিধানের পাশাপাশি বিয়ের দেনমোহর ও যৌতুক সংক্রান্ত বিধিনিষেধও জারি করা হয়েছে।যদিও বিদ্রোহীরা পূর্বে জানিয়েছিল,''নারী শিক্ষায় তারা হস্তক্ষেপ করবেনা।' বিদ্রোহীরা অতীতে মেয়েদের স্কুলে যেতে দিত না, নারীদের বাড়ির বাইরে গিয়ে কাজ করায় কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। পুরুষ সঙ্গী ছাড়া তারা বাড়ির বাইরে কোথাও যেতে পারবে না।বর্তমানেও তারা একই পথে হাটছে। বৃহস্পতিবার তারা সর্বশেষ কাপিসা প্রদেশের তাগাব জেলা দখল করে নিয়েছে। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বিদ্রোহী অধ্যুষিত জেলাগুলোর অধিবাসীরা।
দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের তাখার জেলার সিভিল সোসাইটি কর্মী মেরাজউদ্দিন শরীফ বলেন, বিদ্রোহীদের মূল সমস্যা শুধু শরিয়াহভিত্তিক আইনই নয়, তারা আসলে বিনা-প্রমাণে বিচার কাজ চালায়। অনেক সময় বাদীর পক্ষে কোন যুক্তি প্রমাণ না থাকলেও শাস্তি কার্যকর হয়।অনেক সময় এসব শাস্তির কারন হয় পুর্বের পারস্পরিক শত্রুতা এরই মধ্যে বিদ্রোহীদের দখলকৃত জেলাগুলোতে দেখা দিয়েছে নাগরিক সমস্যাও।
তরিকার প্রাদেশিক কাউন্সিলের সদস্যরা বলেছেন, বিদ্রোহীরা বর্তমানে ৭০ ভাগ জায়গার দখল নিয়েছে।দখলকৃত অঞ্চলের বাসিন্দাদের খাবারের এবং পানির জন্য অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। তখার প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ আজম আফজালি বলেছেন,সেখানকার নাগরিকরা দৈনন্দিন পরিষেবাগুলো থেকে বঞ্চিত। ক্লিনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইত্যাদি বন্ধ রয়েছে।আর হয়ত তা শীঘ্রই চালু হবেনা। মেয়েদের চিকিৎসা শিক্ষা,নার্সিং পেশার মত কাজগুলোও হয়ত অচিরে বন্ধ করে দেয়া হতে পারে।
সুত্রঃ ডেইলি টাইমস
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন