তুরস্কের এজিয়ান অঞ্চলের ইজমির শহরে শক্তিশালী ভূমিকম্পে কমপক্ষে অন্তত ২৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ৮০৪ জন। শুক্রবার রাতে দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে। খবর আনাদোলু এজেন্সির।তুরস্কের তৃতীয় বৃহত্তম শহর ইজমিরে ভয়াবহ এই ভূমিকম্পের চিত্র উঠে এসেছে ভিডিওতে। একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, শক্তিশালী ওই ভূমিকম্পের আঘাতে মুহূর্তের মধ্যে বহুতল একটি ভবন গুড়িয়ে গেল।এদিকে, দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে ৪৩৫ জন বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে ২৫ জন রয়েছে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ)।
তুরস্কের স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৫১ মিনিটে ৬.৬ মাত্রার এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের ১৬.৫৪ কিলোমিটার গভীরে। ভূমিকম্পের পর ২৯৬ বার হয়েছে আফটারশক। তার মধ্যে ২৭টি ছিল শক্তিশালী। রিখটার স্কেলে যেগুলোর মাত্রা ছিল ৪ এর ওপরে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের পর তুরস্কের উপকূলবর্তী শহর ইজমিরে আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন লোকজন। ইজমিরের মেয়র জানিয়েছেন, শহরের ২০টি বাড়ি ভেঙে পড়েছে। এটি তুরস্কের তৃতীয় বৃহত্তম শহর। জনসংখ্যা প্রায় ৪৫ লাখ।
তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেমান সোয়লু জানিয়েছেন, ইজমিরের বেয়ারাকলি ও বোরনোভা জেলায় ছয়টি বাড়ি ভেঙে পড়েছে। উসাক, ডেনিজলি, মনিসা, এডেন, মুগলার মতো সংলগ্ন প্রদেশগুলিত সামান্য ক্ষয়ক্ষতির খবর মিলেছে। স্থানীয় সোশ্যাল মিডিয়ায় যে সব ছবি ও ভিডিও সামনে এসেছে, সেগুলোতে লোকজনকে ধ্বংসস্তুপ সরিয়ে আটকদের বের করে আনার চেষ্টা চালাতে দেখা গেছে।
গ্রিসের সমগ্র পূর্ব উপকূলে কম্পন অনুভূত হয়েছে। রাজধানী এথেন্সেও কম্পন অনুভূত হয়। গ্রিসের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সামোস ও অন্যান্য দ্বীপের বাসিন্দারা ঘরবাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। সেইসঙ্গে পাথর গড়িয়ে পড়ার ঘটনাও সামনে এসেছে। তবে গ্রিসের চেয়ে তুরস্কে কম্পনের তীব্রতা বেশি থাকায় দেশটির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হয়েছে।
বোজাজি ইউনিভার্সিটির অবজারভেটরি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান অধ্যাপক হালুক এজেনার ইস্তাম্বুলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ভূমিকম্পের পর ৩ দশমিক ৩ থেকে ৪ দশমিক ৮ মাত্রার মধ্যে ১৯টি আফটার শক হয়েছে। এসব আফটার শক ১৫ সেকেন্ডেরও বেশি সময় ধরে স্থায়ী ছিল।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন