বরগুনার তালতলীতে শারীরিক প্রতিবন্ধী পঞ্চাশ বছর বয়সী ভিক্ষুক মন্টু মিয়ার ১০ বছরের জমানো সঞ্চয় প্রতারণার মাধ্যমে স্থানীয় প্রতারক নুরজামাল মুন্সী হাতিয়ে নেয়। ভিক্ষুকের কাকুতি ও মিনতিতে থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান মিয়ার ঘটনাস্থল তদন্তের পরপরই ৩ দিনের মাথায় প্রতারকচক্র ভিক্ষুকের সমুদয় টাকা ফেরত দেয়।
জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণ সওদাগর পাড়া এলাকার মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে মন্টু মিয়া (৫০) জন্মের পর থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী ছিলেন। সহায় সম্পত্তি না থাকার কারণে ভিক্ষাবৃত্তির মাধ্যমেই তার জীবন জীবিকা ও পরিবার চলছে। গত ১০ বছরে ভিক্ষা করে জমানোর এক লাখ টাকা অধিক ব্যবসা দেয়ার প্রলোভন দিয়ে একই এলাকার আব্দুর রব গাজীর মাধ্যমে নূর জামাল মুন্সি নেন। কিন্তু লাভ তো দূরের কথা আসল টাকাই ফেরত পাচ্ছিলেন না মন্টু।
আজ দিবে কাল দিবে বলে নুর জামাল মন্টুকে ঘুরাতে থাকে। গত দেড় বছরেও টাকা ফেরত না পেয়ে স্থানীয়দের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো লাভ হয়নি মন্টুর। ভিক্ষুক তার জমানো শেষ সম্বলটুকু আদায়ের জন্য থানায় গিয়ে ওসির কাছে অভিযোগ দিয়ে কাকুতি মিনতি করেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা না করে ওসি মো. কামরুজ্জামান মিয়া প্রতারক নুর জামাল মুন্সির বাড়িতে যান। প্রতারণার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ওসির আল্টিমেটামে প্রতারকচক্র রোববার বিকালে মন্টুর দেওয়া এক লাখ টাকা থানায় জমা দেন। পরে মন্টু মিয়াকে খবর দিয়ে এনে তার কষ্টের জমানো টাকা হাতে তুলে দেন ওসি।
মন্টু মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, জন্মের পর থেকেই জীবনটা অতি কষ্টের ভেতর দিয়েই চলছিল। জমিজমা বলতে আমার কিছুই নেই। আমি প্রতিবন্ধী বিধায় আমার প্রধান পেশা ভিক্ষা। আমার পরিবার নিয়ে চলার একমাত্র আয়ের মানুষ আমি। হাজারো কষ্টের মধ্যেও খেয়ে না খেয়ে নিজের চিকিৎসার জন্য এ টাকা জমিয়েছিলাম। নুরজামাল মুন্সি এলাকার অনেক মানুষের টাকা প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছে। সেই প্রতারণার শিকার হই আমিও। পরে উপায় না পেয়ে থানায় অভিযোগ দিলে দু’দিনের মাথায় আমার টাকা ওসি সাহেব আদায় করে দেন।
এ ব্যাপারে ওসি মো. কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধী মন্টু মিয়া থানায় অভিযোগ দিলে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। দু’দিনের মাথায় ভিক্ষুক মন্টুর টাকা আদায় করে তার হাতে তুলে দিতে সক্ষম হয়েছি।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন