টিউমার অপারেশন করতে গিয়ে জরায়ু কেটে ফেললেন চিকিৎসক

টিউমার অপারেশন করতে গিয়ে জরায়ু কেটে ফেললেন চিকিৎসক

হবিগঞ্জ শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে রোগীর টিউমার অপারেশন করতে গিয়ে জরায়ু কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। বর্তমানে ওই নারী জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন।সোমবার রাতে টাউন হল রোডের ‘সেন্ট্রাল হসপিটাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে’ এসে রোগীর স্বজনরা বিক্ষোভ করেন বলে জানা গেছে।এর আগে গত রোববার বিকালে ডা. আরশেদ আলী সেন্ট্রাল হসপিটালে ওই নারীর টিউমারের অপারেশন করেন।অসুস্থ ওই রোগীর নাম কদর চাঁন (৬৫)। তিনি বানিয়াচং উপজেলার মক্রমপুর গ্রামের মৃত নোয়াজিশ মিয়ার স্ত্রী।

রোগীর স্বজনরা জানান, কদর চাঁন (৬৫) জরায়ু টিউমারে আক্রান্ত হন। গত এক সপ্তাহ আগে তিনি সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি হন।গত রোববার সকালে সদর আধুনিক হাসপাতালের গাইনি বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. আরশেদ আলী তাকে অপারেশনের জন্য শহরের টাউন হল রোডে অবস্থিত ‘সেন্ট্রাল হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে’ যাওয়ার পরামর্শ দেন।ওই নারীকে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করেন তার স্বজনরা। বিকালের দিকে ডা. আরশেদ আলী সেন্ট্রাল হসপিটালে ওই নারীর জরায়ু টিউমারের অপারেশন করেন। কিন্তু অপারেশন শেষে ওই নারীকে ওয়ার্ডে স্থানান্তর করার কয়েক ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও জরায়ুতে লাগানো ক্যাথেটার দিয়ে প্রস্রাব আসা বন্ধ থাকে।

এমনকি ওই নারীর পেট ফুলে ওঠে। একপর্যায় রাত ১টার দিকে পুনরায় ডা. আরশেদ আলীকে খবর দিলে তিনি হাসপাতালে গিয়ে ওই নারীর চিকিৎসা করেন। কিন্তু এর পরও বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় সোমবার ভোরে তাকে সিলেটে স্থানান্তর করা হয়।এদিকে গুরুতর অবস্থায় ওই নারীকে সিলেট পাঠালেও রোগীর সঙ্গে দেয়া ছাড়পত্রে সিল দেননি সেন্ট্রাল হসপিটাল কর্তৃপক্ষ। ফলে সিলেটের কোনো হাসপাতাল ওই রোগীকে ভর্তি নেয়নি। এতে রোগীর অবস্থা আরও সংকটাপন্ন হয়ে ওঠে।সারা দিন সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেও রোগীকে ভর্তি করতে না পারায় সোমবার রাত ৯টার দিকে আবারও রোগী নিয়ে হবিগঞ্জ ফিরে আসেন স্বজনরা। পরে তারা সেন্ট্রাল হসপিটালে এসে বিক্ষোভ করলে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

একপর্যায়ে ছাড়পত্রে সিল নিয়ে আবারও তারা রোগীকে নিয়ে সিলেট চলে যান।এ ব্যাপারে রোগীর ভাগ্নে মহিবুল ইসলাম শাহীন বলেন, চিকিৎসক আরশেদ আলী ও সেন্ট্রাল হসপিটাল কর্তৃপক্ষের ভুলের কারণে মৃত্যুর মুখে পড়েছেন আমাদের রোগী। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্রে সিল না দেয়ার কারণে সিলেটের কোনো হাসপাতালই আমাদের রোগীকে ভর্তি নেয়নি। ডা. আরশেদ আলী অপারেশনের সময় রোগীর জরায়ু কেটে দিয়েছেন। ফলে তিনি এখন মৃত্যু পথযাত্রী।

এ ব্যাপারে সেন্ট্রাল হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার অসীম দেব বলেন, এ রোগীকে রিলিজ দেয়ার সময় আমি ছিলাম না। তবে এখন আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ওই নারীকে সিলেট নিয়ে যাচ্ছি এবং রোগীর সুস্থতায় যা করার প্রয়োজন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করবে।বিষয়টি সম্পর্কে জানতে নারীর অপারেশন করা সেই চিকিৎসক আরশেদ আলীর সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password