ময়মনসিংহের নান্দাইলে মুজববর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে উপহার হিসেবে দেয়া চরভেলামারী নামক স্থানে একটি ঘরের বাসিন্দা এক বিধবাকে বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে স্থানীয় মেম্বার(ইউপি সদস্য) বলেন।
মেম্বার বলেন, প্রশাসন প্রশাসনের জায়গায়, আমার ওয়ার্ডে আমিই সব। এহানে ঘর অইছে, ওই সব ঘরে কেডা থাকবো না থাকবো এইডা আমার ব্যাপার। আমার ঘরে হে (বিধবা) উঠছে কার কথা অনুমতি লইয়া? এর লাইগ্যা তালা মারছি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই ঘরগুলোর অবস্থান নান্দাইল সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে নান্দাইল ত্রিশাল সড়কের বালিপাড়া সেতুর নিচে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে। গত ১৪ জানুয়ারি ১০টি ঘর নির্মাণ শেষে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মাঝে হস্তান্তর করা হয় জমির দলিলপত্রসহ অন্যান্য কাগজপত্র বুঝিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে ১নম্বর খতিয়ানের ২০৬৯ দাগে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট একটি সেমি পাকা ঘর বরাদ্ধ পান মৃত আবল কাশেমের স্ত্রী মোছাম্মৎ আনুয়ারা খাতুন। এক মেয়ে নাতি নিয়ে বসবাস শুরু করেন।
তিনি জানান, অনুমতি না নিয়ে ঘরে ওঠায় স্থানীয় ৮নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মেম্বার বাদল হোসাইন তাকে বের করে দেন। এক পর্যায়ে মেম্বার তাঁর কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে না পারায় মেম্বার ক্ষিপ্ত হয়।
বিধবা আনুয়ারা বলেন, 'গত বৃহস্পতিবার ভোরে ঘরে তালা মাইর্যা বাইরে গেলে আইয়া দেহি আমার তালার ওপর আরেকটা তালা। পরে জানতাম পারছি বাদল মেম্বারে তালা লাগাইয়া চইয়া গেছে। পরে লোকজন লইয়া মেম্বাররে তালা খুইল্যা দেওয়ার অনুরোধ করলে আমার কপালে ঘর নাই বলে তাড়াইয়া দেয়।
বাদল মেম্বার প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেওয়া ঘরে তালা লাগানোর কথা স্বীকার করলেও টাকা চাওয়ার কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, এইটা আমার এক লোকের জন্য বরাদ্ধকৃত ঘর। এইখানে আনুয়ারা উঠবে কেন। তার অত্যধিক সাহস। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমার ওয়ার্ডে আমিই সব। এই সব ঘরে কে উঠবে আমার কাছে বলে উঠতে হবে। তাছাড়া বরাদ্ধ পাওয়া ঘরের মালিক আনুয়ারা একজন গাঁজা ব্যবসায়ী ও এলাকার খারাপ নারী।
নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এরশাদ উদ্দিন বলেন, মেম্বার যে কাজ করেছেন তা বেআইনি। এতো বড় সাহস কোথা থেকে পেলেন। খোঁজ খবর নিচ্ছি।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন