দেশে পরবর্তী প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে তিনজনের নাম প্রস্তাব করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর শিশু কল্যাণ পরিষদে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল আতাউল গনি ওসমানির ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এ নামগুলো প্রস্তাব করেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তবে তাদের মধ্যে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) সাখাওয়াত হোসেন, সু-শাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার ও মানবাধিকার কর্মী, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সুলতানা কামালের নাম প্রস্তাব করেন। এ সময় জাফরুল্লাহ বলেন, আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে আওয়ামী লীগ।
শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় মন্তব্য করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। জাফরুল্লাহ ছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবঃ) সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহীমসহ আরও অনেকে।
এসময় বক্তারা সম্প্রতি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্যের সমালোচনা করেন প্রসঙ্গত, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের শীর্ষ নীতিনির্ধারকরা আইন প্রণয়নের বিষয়টি পর্যালোচনা করছেন।
এ বিষয়ে প্রস্তাবনাসহ রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দেওয়ার কথা জানিয়েছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব বলেছেন, ‘যদি আগের পদ্ধতি অনুসরণ করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়, আমাদের কাছে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। আমরা চিন্তা করছি, সময়মতো রাষ্ট্রপতিকে আমাদের প্রস্তাব দেব।’ এদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠন করা হয়েছে।
এটিই স্বচ্ছ প্রক্রিয়া। ভবিষ্যতেও এ স্বচ্ছ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। তবে এখন পর্যন্ত এটি প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনার নিয়োগে আইনের কথা সংবিধানেই বলা আছে। সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা বলা হয়েছে। ১১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ‘বাংলাদেশের একটি নির্বাচন কমিশন থাকিবে এবং উক্ত বিষয়ে প্রণীত কোনো আইনের বিধানাবলি-সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগদান করিবেন।’
স্বাধীনতার পর ২০১২ সালে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের আমলে সার্চ কমিটির মাধ্যমে প্রথমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনসহ অন্য কমিশনারদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। ২০১৭ সালে বর্তমান নির্বাচন কমিশনও সার্চ কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। শুধু কমিশন গঠন নয়, কমিশনের কাজের ধরন সম্পর্কেও আইনের মাধ্যমে বিস্তারিত ধারণা পাওয়ার কথা বলা হয়েছে সংবিধানে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন