আধা-বস্তা ধান চুরির অভিযোগে এক বৃদ্ধ ভিক্ষুককে বেঁধে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় ঘণ্টাব্যাপী নির্যাতন চালানোর হয়েছে।নেত্রকোনার মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী গ্রামে আব্দুল বারেক নামে এক বৃদ্ধ ভিক্ষুককে ধান চুরির অপবাদ দিয়ে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়।
ওই বৃদ্ধ ভিক্ষুককে বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায়। তিনি হাওরাঞ্চলে ধান কাটার সময়ে ভিক্ষা করতে এসেছিলেন।নির্যাতনের ভিডিওটি রেকর্ড করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয় স্থানীয়রা। পরে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ওই যুবককে আটক করে। বুধবার সন্ধ্যায় নেত্রকোণার মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের বারোগরি পূর্বহাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার ওই ব্যক্তির নাম আব্দুল বারেক (৫৫)। ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বনহাটি গ্রামের মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে। আর অভিযুক্ত যুবকের নাম মো. মাসুদ মিয়া (৩৮)। তিনি বারোগরি পূর্বহাটি গ্রামের মোক্তার হোসেনের ছেলে।
এ ব্যাপারে আব্দুল বারেকের ছেলে আজিজুল মিয়া (২৪) মুঠোফোনে বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। আমি ঢাহা গার্মেন্টসে কাম করি। আমার আব্বা চার পাঁচ দিন আগে মদনের গোবিন্দশ্রী একটি বাড়িতে থাকইক্কা ধান সাহায্য তুলে। অহন আমার আব্বারে তারা চুরির অপবাদ দিয়া বাইন্দা নির্যাতন করছে। আবার উল্টা মামলা করছে। আমরা মামলা করবাম কিংবা, টেহা পয়সা নাই। পুলিশ মামলা নিত চাইতাছে না।
পুলিশ হেফাজতে থাকায় অভিযুক্ত মাসুদ মিয়া ও নির্যাতনের শিকার বারেকের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে মাসুদের বড় ভাই খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘আব্দুল বারেক আমার দুই বস্তা ধান চুরি করেছে। তাকে হালকা শাসন করা হয়েছিল। পরে পুলিশে খবর দিয়ে দুই বস্তা ধানসহ তাকে থানা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, ‘আব্দুল বারেককে মারধরের ঘটনায় মাসুদ মিয়াকে আটক করা হয়েছে। বারেক এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। তাকে হাসপাতাল থেকে থানায় এনে রাখা হয়েছে। বারেকের বিরুদ্ধে মাসুদের ভাই থানায় একটি চুরির মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী বলেন, আব্দুল বারেককে নির্যাতনের ভিডিওটি পুলিশের নজরে এসেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। বারেকের বিরুদ্ধে চুরির মামলা হলেও তিনি চাইলে তাকে যারা নির্যাতন করেছেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন