ম্যারাডোনার হাত দিয়ে গোল ধরতে না পেরে গর্বিত রেফারি

ম্যারাডোনার হাত দিয়ে গোল ধরতে না পেরে গর্বিত রেফারি

এমনিতে রেফারিদের কেউ মনে রাখে না। নেপথ্যে থেকে খেলা পরিচালনা করাই তার কাজ। কিন্তু ব্যতিক্রম হয় কখনো, কোনো ম্যাচের সঙ্গে অমরত্ব পেয়ে যান রেফারিও। তিউনিসিয়ার আলি বিন নাসেরও সেরকম পেয়েছিলেন। ডিয়েগো ম্যারাডোনা যে ম্যাচে নায়ক থেকে মহানায়ক হয়ে উঠেছেন, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৮৬ বিশ্বকাপের সেই কোয়ার্টার ফাইনালে শেষের বাঁশি বেজেছিল নাসের হাতেই। ম্যারাডোনার প্রয়াণের পর সেই নাসের বললেন, সেই ম্যাচে শতাব্দীর সেরা গোলটা করাতে পেরে তিনি গর্বিত।

বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের ওই ম্যাচটিতে ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে পরাজিত করে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছিল আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে হাত দিয়ে ঐতিহাসিক ওই গোলের চার মিনিট পর নিজেদের অর্ধ থেকে একক প্রচেষ্টায় ইংলিশ রক্ষণভাগকে ভেঙ্গে দুর্দান্ত এক গোল করে ম্যারাডোনা আর্জেন্টিনার জয় নিশ্চিত করেছিলেন। বর্তমানে ৭৬ বছর বয়সী রেফারি আলি বিন নাসির সেদিনের সেই স্মৃতি মনে করে স্বীকার করেছেন, তার হাতে আসলে কোনো উপায় ছিল না।

বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিউনিসিয়ান রেফারি বিন নাসেরে বলেন, 'সে মিডফিল্ড থেকে বল নিয়ে দৌড় শুরু করেছিল আর আমি তার পেছন পেছন ছুটছিলাম। ম্যারাডোনার মতো কাউকে রেফারিং করার সময় তার ওপর থেকে চোখ সরানো যায় না। তারা (ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়রা) তিনবার তাকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু লক্ষ্য অর্জনের ক্ষুধা তাকে শুধু সামনেই এগিয়ে নিচ্ছিল।'

তিনি আরো বলেন, 'বক্সের বাইরে থেকে আমি অবাক হয়ে দেখছিলাম, কীভাবে তিন ডিফেন্ডারকে সে কাটাল। প্রায় ৫০ মিটার দৌড়েছিল। ভেবেছিলাম, ডিফেন্ডাররা এবার তাকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করবে। সেরকমই ভাবছিলাম এবং পেনাল্টির বাঁশি বাজানোর জন্য প্রস্তুত ছিলাম।'

তবে বিতর্কিত প্রথম গোলটি সত্বেও মেক্সিকো সিটির ওই ম্যাচটি ক্যারিয়ারের সবচেয়ে স্মরণীয় ম্যাচ হিসেবে অভিহিত করেছেন বিন নাসির। প্রথম গোলটিতে সহকারী রেফারি বুলগেরিয়ার বোগডান ডোচেভের দিকেই অবশ্য আঙ্গুল তুলেছেন বিন নাসির। ওই গোলটি সবচেয়ে ভাল দেখেছেন ডোচেভ। যে কারণে বিন নাসির প্রথমে কিছুটা সংশয়ে ছিলেন।

ডোচেভ হ্যান্ডবলের সিগন্যাল না দেয়ায় গোলটির সিদ্ধান্ত বহাল রাখতে হয়। ২০১৭ সালে ৮০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন ডোচেভ। তিনি নিজেও স্বীকার করেছিলেন, সিদ্ধান্তের ব্যপারে সহকারী রেফারিকে ম্যাচ পরিচালনাকারী রেফারির সাথে আলোচনার কোন অনুমতি দেয়নি ফিফা।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password