বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যেন ময়লার ভাগাড়

বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যেন ময়লার ভাগাড়

ভোলার বোরহানউদ্দিনের ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যেন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। অপরদিকে জনবল সংকটের কারণে প্রায় ২ লাখ লোকের যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা মিলছেনা।

গত ১ সপ্তাহে প্রায় ১ শ’ করোনা রোগী শনাক্ত হলেও হাসপাতালে কোভিড বিশেষায়িত ইউনিট নেই। আশঙ্কাজনক রোগীদের ভোলা সদর হাসপাতাল বা বরিশালে প্রেরণ করা হয়। যদিও হাসপাতাল কতৃপক্ষ বলছে সহসাই পুরুষ ওয়ার্ডটিকে কোভিড রোগীদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১৩ টি অক্সিজেন সিলিন্ডার তাদের কাছে মজুত আছে।

হাসপাতাল সূত্রে আরও জানা যায়, ৪ জন এমবিবিএস ডাক্তার, ৭-৮ জন নার্স ও ৮-৯ জন স্টাফ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু সম্মুখ সাড়ির যোদ্ধা হিসেবে তাদের অনুকূলে সরকারিভাবে কোন প্রণোদনা আসেনি।

হাসপাতালে প্রায় ১০ বছর আগে পাওয়া এক্স-রে মেশিন রেডিওগ্রাফারের অভাবে কোন সেবা দেয়ার আগেই মেশিনটি বিকল হয়ে পড়ে আছে।

প্যাথলজিক্যাল ল্যাবে ৩ জন টেকনোলোজিষ্টদের মধ্যে কাগজে- কলমে আছে ১ জন। তাও তিনি প্রেসণে(ডেপুটেশনে) ভোলা সদর হাসপাতালে পিসিআর ল্যাবে কর্মরত। প্যাথলজিক্যাল ল্যাব ১ জন ল্যাব এসিস্ট্যান্ট দিয়ে করোনা শনাক্তের পাশাপাশি রোগীদের নিয়মিত পরীক্ষা কোন রকমে চলছে।

সরজমিনে দেখা যায়, দক্ষিণ পাশে দ্বিতল হাসপাতাল ভবনের সাথে লাগোয়া উঁচু ময়লার ভাগার। ওই স্থানে ব্যবহৃত ইঞ্জেকশনের এ্যাম্পুল, স্যালাইন সহ অন্যান্য বর্জ্য। ভবনের দ্বিতীয় তলায় শিশু ইউনিট। ওই ইউনিটের বাথরুমের পাইপ নীচের সেপটি ট্যাংকির থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিচে মুল-মুত্র পড়ছে। পাশের সার্ভার রুম, ইমার্জেন্সি রুম, স্টোর রুমের কর্মকর্তারা জানালা বন্ধ করে তাদের কাজ করছেন। ডেঙ্গু লার্ভার অন্যতম আশ্রয়স্থল ১০-১২ টি ডাবের খোলাও শিশু ও মহিলা ইউনিট বরাবর মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। ড্রেনে দূর্গন্ধযুক্ত জমে থাকা পানিতো আছেই।

শিশু ও মহিলা ইউনিটের ভর্তি রোগীরা জানান, একটু বাতাস হলে মল-মুত্রের দূর্গন্ধে পেটের নাড়ি-ভূড়ি উল্টিয়ে আসে।

এছাড়া পুরুষ,মহিলা ও শিশু ইউনিটের বারান্দায় ময়লা ফেলার বক্সের উপর ব্যবহৃত ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ, স্যালাইন ফেলে রাখতে দেখা যায়।

অন্যদিকে একই ব্যক্তি একই রুমে করোনার এন্টিজেন কীট টেষ্ট সহ অন্যান্য পরীক্ষা করতেও দেখা যায়। এতে করোনা নেগেটিভ রোগীদের একই জায়গায় জড়ো হওয়ায় সংক্রমণের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায় বলে সচেতন মহল মনে করছেন।

জনবল কাঠামো অনুযায়ী হাসপাতালে ২১ জন ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে ৯ জন সহ মোট ৩০ জন এমবিবিএস ডাক্তার থাকার কথা। ইউনিয়ন পর্যায় সহ হাসপাতালে কাগজে-কলমে বর্তমানে ১১ জন ডাক্তার কর্মরত আছে। এর মধ্যে ১ জন ডাক্তারের বরগুণা জেলায় ডেপুটেশনের অর্ডার হয়েছে। অন্যান্য পদেও রয়েছে তীব্র জনবল সংকট।

এ বিষয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা(টিএইচএ) ডা. তপতী চৌধুরী বলেন, ময়লা, বর্জ্যের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রকৌশল শাখায় চিঠি দেয়া হচ্ছে।

একই স্থানে করোনার টেষ্ট ও সাধারণ টেষ্ট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা হওয়া উচিৎ না তবে জায়গার অভাবে কী আর করার আছে।

তিনি আরও বলেন, জীবনের ঝঁকি নিয়ে সীমিত জনবল নিয়ে আমরা সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password