নরসিংদীতে ধর্ষণ শেষে পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় দগ্ধ প্রবাসীর স্ত্রী মারা গেছে

নরসিংদীতে ধর্ষণ শেষে পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় দগ্ধ প্রবাসীর স্ত্রী মারা গেছে

নরসিংদীর রায়পুরায় টিকা দেওয়ার কথা বলে ধর্ষণ ও অগ্নিদগ্ধ সেই পারভিন অবশেষে মারা গেছেন। সোমবার ভোরে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। রায়পুরা থানার এসআই দেব দুলাল মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছেন। উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের সোবানপুর গ্রামের দানা মিয়ার মেয়ে পারভিন বেগমের সঙ্গে পাহাড় মরজাল এলাকার প্রবাসী জাকির হোসেনের বিয়ে হয়। ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি তাকে তালাক দেন পারভিন।

পরবর্তীতে নোটারির মাধ্যমে একই বছরের ১ মার্চ নরসিংদী শহরের দাসপাড়া মহল্লার শাহ আলম নামে এক যুবকে বিয়ে করে পারভিন। জাকির হোসেন ও পারভিন আক্তার দম্পতি ১২ বছর বয়সী জেমি নামের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। মেয়েকে নিয়ে পারভিন তার বাবার বাড়ি একই উপজেলার বাঁশগাড়ি এলাকায় থাকতেন।

এর আগে, শনিবার দুপুরে টিকা দেওয়ার কথা বলে পারভিনকে বাড়ি থেকে ডেকে নেন সাবেক শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে সন্ধ্যার পর তার মুখ বেঁধে রায়পুরার লোচনপুর এলাকার একটি নির্জন বাঁশঝাড়ের নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।

পরে পারভিনের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।  এ ঘটনায় সাবেক দেবর ও ননদদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন অগ্নিদগ্ধ পারভিন বেগম।

রায়পুরা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চিকিৎসকদের পরামর্শে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোর প্রায় ৪টার দিকে মৃত্যুবরণ করে পারভিন।

রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত ডা: এ. কে. এম. রেজাউল ইসলাম খান জানায়, পারভিন বেগমের শরীরের প্রায় ৮০ ভাগ পুড়ে গেছে।

রোববার দুপুরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যায় চেষ্টায় রায়পুরা থানায় ৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন পারভিনের ছোট ভাই আকরাম হোসেন।

অন্যদিকে অভিযুক্ত আলী হোসেনের মা হাজেরা বেগম জানান, পারভিনের সঙ্গে আমার ছেলের ২ বছর আগেই ডিভোর্স হয়ে গেছে। আমার ছেলের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। তার সঙ্গে এমন ঘটনা কীভাবে ঘটল আমরা এর কিছুই জানি না। তবে আমার ছেলে ও নাতিকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। তারা নির্দোষ। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সঠিক বিচার করার দাবি জানাচ্ছি।

রায়পুরা থানার এসআই দেব দুলাল দে জানান, এই ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। আর ঘটনার সঙ্গে জড়িত আলী হোসেন ও শাহরিয়ারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password