দুটি মাইক্রোবাসে করে আত্মীয়ের বিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন একই পরিবারের কয়েকজন। প্রথম মাইক্রোবাসটিকে অনুসরণ করছিল পেছনের মাইক্রোবাস।হোসেনপুরের লেভেল ক্রসিংয়ে কোনো গেট ছিল না। প্রথম মাইক্রোবাসটি ক্রসিং পার হয় গ্রামের লোকজনের চলাচলের জন্য তৈরি করা রাস্তায় ঢুকে যায়। ট্রেনের শব্দ শুনতে না পেয়ে অসাবধানতায় ক্রসিং পার হওয়ার চেষ্টা করেন পেছনের মাইক্রোবাস চালক। তখনই রেললাইন দিয়ে আসা সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দিয়ে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে নিয়ে যায়।
রোববার(০৫সেপ্টেম্বর)দুপুরে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা এলাকার হোসেনপুর রেল ক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের দুইজন নিহত হন।নিহতরা হলেন ফরিদ মিয়া (৪৮) ও তার ছেলে আফিফ (৮) তবে ঘটনার পর পুলিশ গণমাধ্যমকর্মীদের তিনজন নিহতের খবর জানিয়েছিল।
আহতরা হলেন নিহত ফরিদ মিয়ার বড় মেয়ে রেজওয়ানা উদ্দিন রিজু (২৪)ছোট ছেলে লাবিব উদ্দিন (৬)ফরিদ উদ্দিনের ভাই কামাল উদ্দিন (৩৫)স্ত্রী রুমি বেগম (৩৪)বোন লিলি বেগম (৫৫)তার মেয়ে রাবেয়া বেগম (২৪) ও মাইক্রোবাস চালক সবুজ মিয়া।
জানা গেছে দুটি মাইক্রোবাস যোগে এক আত্মীয়ের বিয়েতে অংশ নিতে কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরার হোসেনপুর যাচ্ছিলেন একই পরিবারের কয়েকজন। প্রথমটি রেলক্রসিং পার হলেও অপর মাইক্রোবাসটি আর পার হতে পারেনি। রেললাইনে ওঠার পরই মাইক্রোবাসটি ট্রেনের সামনে পড়ে যায়। ট্রেনটি মাইক্রোবাসটিকে টেনে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে নিয়ে যায়।এতে ফরিদ মিয়া ও আফিফ ঘটনাস্থলেই মারা যায়।পরে হতাহতদের উদ্ধার করে স্থানীয়রা সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাপসাতালে প্রেরণ করেন।দুর্ঘটনার পর সিলেটের পথে রেল যোগাযোগ সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ থাকলেও দুই ঘণ্টা পর তা সচল হয়।
ফরিদ মিয়ার ভাগনি তানজিনা বেগম জানান দুটি মাইক্রোবাসে করে তারা সকলে ভাটেরায় এক আত্মীয়ের বিয়েতে যাচ্ছিলেন।একটি মাইক্রোবাস আগে ছিল।পেছনের মাইক্রোবাসটিকে ট্রেন ধাক্কা দেয়।এতে তার মামা ও মামাতো ভাই নিহত হন। এছাড়া তানজিনার মামি মামাতো বোন খালাসহ ছয়জন আহত হন।
আহত মাইক্রোবাস চালক সবুজ মিয়া বলেন আমরা দুটি মাইক্রোবাস নিয়ে ভাটেরার উদ্দেশ্যে রওনা দেই।রেললাইন পার হওয়ার সময় আমরা ট্রেনের কোনো আওয়াজ শুনতে পাইনি।ট্রেনটি কোনো হুইসেলও দেয়নি। প্রথম গাড়িটি ঠিকমতো পার হলেও দ্বিতীয় গাড়িটিকে সিলেটগামী পারাবাত ট্রেন ধাক্কা দেয়।
কুলাউড়ার ভাটেরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ এ কে এম নজরুল ইসলাম বলেন আমার এলাকাটাকে বিভক্ত করেছে রেললাইন।রেললাইনের দুই পাশে হাজার হাজার মানুষের বসবাস। মানুষ চলাচলের সুবিধার্থে রেললাইনের ওপর দিয়েই সড়ক নির্মাণ করেছেন।আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছি লেভেল ক্রসিং নির্মাণ করার জন্য। কিন্তু এতো ঝুঁকিপূর্ণ স্থানেও লেভেল ক্রসিং নির্মাণ করা হয়নি।রেলবিভাগ এসে শুধু সড়কের মধ্যে খুঁটি গেড়ে চলে যায়।
কুলাউড়া স্টেশন মাস্টার মো মুহিব উদ্দিন বলেন, যে স্থানে দুর্ঘটনা ঘটেছে সেখানে কোনো গেট ছিল না।এটা সরকারি কোনো রাস্তা নয় ব্যক্তিগত রাস্তা।গ্রামের লোকজন এই রাস্তা তৈরি করেছেন। এই সড়কে কোনো গেট থাকার কথাও নয়।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন