বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের হলদিয়া গ্রামে সরকারী খালে অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে পানি আটকিয়ে মাছ চাষ করায় জলাবদ্ধতায় তলিয়ে রয়েছে হলদিয়া ও গুরুদল গ্রামের ১০ হাজার একর কৃষি জমি। বাঁধের কারণে পানি অপসারণ না হওয়ায় বৃষ্টির সময় বাড়ি ঘর তলিয়ে ভোগান্তিতে পরেছে কয়েক হাজার বাসিন্দা।
এর প্রতিকার চেয়ে আমতলী ইউএনওর নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভূক্তভোগী গ্রামবাসী।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলা হলদিয়া ইউনিয়নের হলদিয়া ও গুরুদল গ্রামের মধ্যদিয়ে কাউনিয়া নামে একটি সরকারী খাল প্রবাহিত হয়ে জলেখার ৫ ব্যান্ডের সুইস গেটের সাথে মিলিত হয়েছে। এই দুই গ্রামের পানি নিষ্কাষনের একমাত্র কাউনিয়া খালটিতে স্থানীয় বাসিন্দা নান্নু মোল্লা গত কয়েক বছর ধরে অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করে আসছে। খালের গতি পথের ৫টি জায়গায় বাঁধ এবং একটি কালভাটের মুখ বন্ধ করে মাছ চাষ করায় গত কয়েকদিনের অতি এবং ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ওই এলাকা এখন ৩-৪ ফুট পানিতে তলিয়ে রয়েছে। দেখা দিয়েছে মারাত্মক আকারে জলাবদ্ধতা। বাঁধের কারনে পানি নামতে না পারায় গ্রামের অধিকাংশ বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে ব্যাপকভাবে জলাবদ্ধার সৃষ্টি হয়েছে। পানির কারনে কৃষকরা এখন হালচাষ মৌসুমে হাল চাষ করতে পারছে না ফলে প্রায় ১০ হাজার একর জমি অনাবাদী থাকার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
সরকারী কাউনিয়া খালের বাঁধ অপসারন করার দাবীতে ভূক্তভোগী কৃষকের পক্ষে রুহুল আমিন প্যাদাসহ কয়েকজন কৃষক মঙ্গলবার সকলে আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
কৃষক রুহুল আমিন প্যাদা অভিযোগ করে বলেন, হলদিয়া গ্রামের নাননু মোল্লা প্রভাব খাটিয়ে সরকারী কাউনিয়া খালে অবৈধ ভাবে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় হলদিয়া এবং গুরুদল গ্রামের প্রায় ১০ হাজার একর জমি পানিতে তলিয়ে রয়েছে। বর্তমানে পানি অনেকের বাড়ি ঘরে ঢুকে পরেছে। পানির কারনে চাষাবাধও বন্ধ রয়েছে।
হলদিয়া গ্রামের রাসেল প্যাদা বলেন, কাউনিয়া খালে বাঁধ দিয়া নাননু মোল্লা মোগো সর্বনাশ করছে। পানিতে মোগো জমি এহন ২-৩ আত তলাইয়া রইছে। মোরা আল চাষ করতে পারি না। আমন ধানের বীজ সব পইচ্যা নষ্ট অইয়া গ্যাছে। মোগো অইছে এহন মরন দশা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম স্বপন বলেন, কাউনিয়া খালে অবৈধ ভাবে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় এখন জলাবদ্ধাতায় প্রায় ১০ হাজার একর জমি তলিয়ে রয়েছে। পানির কারনে কৃষকের হালচাষ বন্ধ রয়েছে। আমনের বীজ তলা পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এভাবে পানি জমে থাকলে দুই গ্রামের প্রায় ১০ হাজার একর জমি অনাবাদী থাকার আশঙ্কা রয়েছে।
অভিযুক্ত নান্নু মোল্লা বাঁধ দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন। তবে কালভাটের মুখে জাল দিয়ে মাছ চাষের কথা স্বীকার করেন।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান কাউনিয়া খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষের বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে তদন্তের জন্য উপজেলা কৃষি অফিসারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে বাঁধ অপসারন করে কৃষকদের জলাবদ্ধ মুক্ত করা হবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন