উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকের পর তাকে নিজের বিশেষ বিমানে করে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক সহকারী উপদেষ্টা ম্যাথিউ পটিঙ্গা এ কথা জানিয়েছেন।
ট্রাম্পের এই আকস্মিক প্রস্তাবে বৈঠকে উপস্থিত থাকা অন্যান্য কূটনীতিকরা বেশ অবাক হয়ে গিয়েছিলেন।
মার্কিন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কিমকে বন্ধু বলে মনে করতেন।
উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা–নিরীক্ষা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান দ্বন্দ্বের কোনো অবসান হয়নি। দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যেও ইতিবাচক কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। ২০১৯ সালে ভিয়েতনামের হ্যানয় নগরীতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কিম জং–উনের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
উত্তর কোরিয়া থেকে ট্রেনে ভ্রমণ করে কিম জং–উন ওই বৈঠকে যোগ দেন। বৈঠক শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ‘এয়ারফোর্স ওয়ান’ দিয়ে উত্তর কোরিয়ার নেতাকে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার প্রস্তাব দেন। সে সময় মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারি সফরের ওই উড়োজাহাজে বাড়ি ফেরার প্রস্তাবে রাজি হননি উন।
ওই বছরের জুন মাসে অনেকটা নাটকীয়ভাবেই ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কিম জং–উনের মধ্যে দেখা হয়। দুই কোরিয়ার সীমান্তবর্তী শূন্য এলাকায় শীর্ষ দুই নেতার সাক্ষাতের পর ট্রাম্প বলেছিলেন, আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে।
ট্রাম্প বলেছিলেন, ওই আলোচনার পরে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উত্তেজনা কমে আসবে। তবে এর পরে উত্তর কোরিয়া তাদের পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষার কর্মসূচিতে কোনো পরিবর্তন করেনি।
ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার নেতাকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিম জং–উনও ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তার দেশে আমন্ত্রণ জানান বলে সে সময় সংবাদমাধ্যমে খবর প্রচার করা হয়। তবে বাস্তবে কিছুই ঘটেনি।
হ্যানয় নগরীতে ট্রাম্প-উনের বৈঠকের আগে তাদের মধ্যে সিঙ্গাপুরে আরেকটি বৈঠক হয়েছিল। দুই বৈঠকেই ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ আয়েশি ভঙ্গিতে কথা বলেছেন কিম জং–উনের সঙ্গে। এসব বৈঠক নিয়ে কথা বলেছেন ট্রাম্পের একসময়ের নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন। বিবিসিকে দেয়া বক্তব্যে জন বোল্টন বলেছেন, উনকে ট্রাম্প সেরা বন্ধু বলে মনে করেছিলেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ উত্তর কোরিয়াকে বৈরী রাষ্ট্রই মনে করে। পরমাণু বোমা নিয়ে উত্তর কোরিয়ার পরীক্ষা-নিরীক্ষাকে আমেরিকার লোকজন তাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মনে করেন। এ ছাড়া বহির্বিশ্বে মার্কিনমিত্রদের কাছেও উত্তর কোরিয়া বৈরী রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচিত।
সুত্রঃবিবিসি
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন