অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনী সমাবেশে ভাষণ চলাকালে, গুলি চালানো হয় তাকে লক্ষ্য করে। ডান কান ছিদ্র করে বেরিয়ে যায় একটি বুলেট। বেশ রক্তক্ষরণ হলেও, নিরাপদ ও সুস্থ আছেন রিপাবলিকান নেতা। কয়েক ঘণ্টা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরেছেন তিনি। ট্রাম্পের নিরাপত্তারক্ষীদের পাল্টা গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় হামলাকারী।
ডোনাল্ড ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে এতো কাছ থেকে আততায়ীর গুলি ছোঁড়ার পর, প্রশ্নবিদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ট্রাম্প এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী, আবার সাবেক প্রেসিডেন্টও। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সুবিধাই পান তিনি। এরপরও জনসমাবেশে সবার সামনে তার ওপর হামলার পর সমালোচনার মুখে পড়েছে দেশটির সিক্রেট সার্ভিস।
নির্বাচনের আগে এই ঘটনায় চাপ বাড়বে বাইডেন প্রশাসনের ওপর। নির্বাচনের মাত্র চার মাস বাকি থাকতে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলার ঘটনায় তোলপাড় চলছে যুক্তরাষ্ট্রে। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কয়েকটি জায়গায় বিক্ষোভ করেছে ট্রাম্পের সমর্থকরা। হামলার মুখেও অবিচল থাকায় ট্রাম্পকে বীর এবং সাহসী আখ্যা দিচ্ছেন তারা। এ হত্যাচেষ্টার কী প্রভাব পড়বে ভোটের মাঠে- তা নিয়েও চলছে নানা বিশ্লেষণ।
নির্বাচনী সমাবেশে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে হামলার ঘটনায় ব্যাপক জোরদার করা হয়েছে সাবেক প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা। ঘটনার পরপরই, নিউইয়র্কের ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তীকর্মীদের উপস্থিতি। ভবনে টহল দিচ্ছে সাদা পোশাকের পুলিশও। এছাড়া, রাখা হয়েছে ডগ স্কোয়াড।
এদিকে, মার-ই-লাগো রিসোর্টের আশপাশেও জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা, বাড়ানো হয়েছে টহল। সাবেক রাষ্ট্রপ্রধানের অন্যান্য স্থাপনাও বর্তমানে রয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর নজরদারিতে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলাকারীর পরিচয় প্রকাশ করেছে, এফবিআই। শ্বেতাঙ্গ ওই তরুণের নাম থমাস ম্যাথু ক্রুকস।
এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা। জানায়, হামলাকারীর বয়স ২০ বছর। আততায়ী পেনিসিলভানিয়ার বেথেল পার্কের বাসিন্দা। এদিকে, রাজ্যটির ভোটার তালিকায়, বেথেল পার্কের ম্যাথু ক্রুকস নামে যার নাম নিবন্ধিত, তিনি রিপাবলিকান। হামলায় কোনো স্নাইপার রাইফেল ব্যবহার করা হয়নি।
হামলাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় একটি 'এআর-ফিফটিন' স্বয়ংক্রিয় রাইফেল। এফবিআই জানায়, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাম্পকে হত্যাই ছিলো আততায়ীর উদ্দেশ্য। তবে, এখনও হামলার সঠিক কারণ জানা যায়নি। সিক্রেট সার্ভিসের গুলিতে নিহত হন হামলাকারী।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলা হয়েছে। পেনসিলভানিয়ায় এক নির্বাচনী জনসভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় এই ঘটনা ঘটে। এতে আহত হলেও প্রাণে বেঁচে গেছেন তিনি।
রোববার (১৪ জুলাই) এক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন নিউজ এ তথ্য জানায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তাতে দেখা গেছে হামলায় ট্রাম্পের কান ও মুখমন্ডল বেয়ে রক্ত পড়ছে। এরপর দ্রুত পাশে থাকা এক গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় ট্রাম্পকে।
সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাঁর প্রচার শিবির জানিয়ছে, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সুস্থ আছেন। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এদিকে ট্রাম্পের ওপর হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, পেনসিলভানিয়ায় সহিংসতার ঘটনায় সবার নিন্দা জানানো উচিত।
পেনসিলভানিয়ায় এক নির্বাচনী জনসভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট দিয়েছেন তিনি।
পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘হামলাকারী গুলি ছোড়ার সঙ্গে সঙ্গেই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় জন্য প্রথমেই ধন্যবাদ দিতে চাই সিক্রেট সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। এটা অবিশ্বাস্য যে আমাদের দেশে এ রকম একটি ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারী সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি। হামলাকারী নিহত হয়েছেন।’
ট্রাম্প আরও লিখেছেন, ‘আচমকা আমি শব্দ শুনি, আর তখনই বুঝতে পারি যে অঘটন ঘটেছে। অনুভব করি গুলি আমার ডান কানের চামড়া ফুটো করে দিয়েছে। অনেক রক্ত পড়তে থাকে, আমি তখন বুঝতে পারি কী ঘটেছে।’ ট্রাম্প বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারে গুলিতে যিনি নিহত হয়েছেন, তার পরিবারকে আমি সমবেদনা জানাই।
গুরুতর আহত আরেকজনের পরিবারের প্রতিও আমি সমবেদনা জানাই।’ পোস্টের শেষে ট্রাম্প বলেন, ‘ঈশ্বর আমেরিকার মঙ্গল করুন!’ উল্লেখ্য, স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটের দিকে ট্রাম্পের ওপর হামলা হয়। পেনসিলভানিয়ায় এক নির্বাচনী প্রচারে এ ঘটনা ঘটে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন