রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয় এতে দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। তাঁরা দুজনই আওয়ামী লীগের কর্মী বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তাঁদের নাম এখনো পাওয়া যায়নি।
রংপুর মেডিকেলে কলেজ হাসপাতাল মর্গের দায়িত্বে নিয়োজিত সর্দার আবদুল জলিল বলেন, হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে দুজন মারা গেছেন। তবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগেই একজনের মৃত্যু হয়েছে। আরেকজনের বিষয়টি বিস্তারিত বলতে পারেননি।
আজ রোববার বেলা ১২টার দিকে শহরের সিটি বাজার ও জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটের সামনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের এ পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এদিকে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের নাম পাওয়া যায়নি। পুরো শহরজুড়ে উত্তাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১২টার দিকে শহরের বেতপট্টি এলাকায় অবস্থিত আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে সন্ত্রাসবিরোধী একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের জেলা পরিষদ সুপার মার্কেট এলাকায় পৌঁছায়। এ সময় সিটি বাজার ও টাউন হল চত্বরে আগে থেকে অবস্থান নিয়ে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা। তাঁরা আওয়ামী লীগের মিছিলকে ধাওয়া দেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ বেধে যায়।
এলাকার লোকজন বলেন, সকাল ১০টা থেকে রংপুর টাউন হল চত্বরে সমবেত হতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। সেখানে স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয় শহীদ মিনার ও টাউন হল চত্বর। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা শহরের বেতপট্টি এলাকায় মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। দুপুর ১২টার দিকে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।
শহর ঘুরে দেখা যায়, শহরের জাহাজ কোম্পানি মোড়, পায়রা চত্বর, জেলা পরিষদ সুপার মার্কেট, সিটি করপোরেশন, টাউন হল চত্বর, অফিসপাড়া, কাচারি বাজার এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের শহরের কোথাও অবস্থান করতে দেখা যায়নি। তবে সেনাবাহিনীর সদস্যদের গাড়িতে টহল দিতে দেখা গেছে।
এদিকে রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে গণপরিবহনসহ ব্যক্তিগত গাড়িও চলছে না। তবে শহরে রিকশা, অটোরিকশা চললেও তুলনামূলকভাবে অনেক কম। শহরের বিপণিবিতান, মার্কেট বন্ধ। শহরের কামারপাড়া ঢাকা বাসস্ট্যান্ড, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে আন্তজেলা বাসসহ কোনো দূরপাল্লার বাস চলছে না। গণপরিবহন না পেয়ে অনেকে রিকশা কিংবা অটোরিকশায় ভেঙে ভেঙে গন্তব্যে রওনা হন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন