একটি কবিতা 'শব্দহীন চেতনা'

একটি কবিতা 'শব্দহীন চেতনা'
  • দীর্ঘ নিশ্চল চেতনা যখন তোমার মনের অন্তর্নিবিষ্ট বোধকে জাগায়

  • তখন তোমার স্থবিরতার ঘোরে আমি আক্রান্ত হই জটিল সাইকোসিসে।

  • তোমার যাতনা তো আমার অ্যাড্রেনালিনের মাত্রা চরমে নিয়ে,

  • একটা ঘন,একটা প্রগাঢ় বায়বীয় ডেনড্রাইটের জন্ম দেয় মনে। 

  • হাওয়ার রাত কিংবা নক্ষত্রের রাতের বেবিলনের রাণীর ঘাড়ের সৌন্দর্যে,

  • আমি ইস্রাফিলের শিঙ্গা আর জিবরাইলের ডানার সন্ধি দেখতে পাই-

  • তোমার নিঃশব্দ কবিতায়। 

  • মানুষ যখন বিস্তর প্রশ্নের ইতিহাস আর অজানা উত্তরের দর্শন পড়ে ক্লান্ত হয়,

  • তখন সহজ সূত্র মিলে যাওয়া বিজ্ঞানকেই ঈশ্বর ভেবে প্রশান্তি পায়। 

  • অথচ বিজ্ঞান আমাকে ন্যূনকল্পে একরাত ঘুম কিংবা ভালোবাসা দিতে পারে নি।

  • পাখির গানে যে প্রেমে পারমার্থিক চেতনায় মাত্রাযুক্ত বর্ণের সম্মিলন ঘটে,

  • জোনাকির যে ক্ষীণ আলো মধ্যরাতে প্রেমিকার মুখের মতো মায়ার জালালিয়াত দেখায়,

  • মায়ের হারিয়ে যাওয়া আঁচল যে বিপত্তিহীন স্নেহের জন্ম দেয়,

  • যে প্রবোধ বাবার চশমার ফ্রেমের আড়ালে দেখা যায়,

  • তা তো তোমার লেখা শব্দহীন কবিতায় পেয়েছি আমি-

  • এই রাতে, হারিয়ে যাওয়া পৌষের মৃদু জীবিত পৃথিবীর এক কোণে।

  • বিজ্ঞানে নয়, সজ্ঞানে ধারণ করা তোমার অস্তিত্বে। 



  • অবিরাম উন্মাদনায় খেই হারিয়ে ফেলে যখন নিয়ন আলো আমার চোখে তীব্র মনে হয়,

  • তোমার প্রাচীণ গানের সুর আমার আরাধ্য হয়, আমি ঢেউ তুলি না থাকা নূহের নৌকায়।



  • স্মৃতির বিভ্রমে কিংবা বোধের সীমাহীন আড়ষ্টতায় পৃথিবীর যাবতীয় চেতনা শিল্পের মতো, সাহিত্যের মতো আমি তোমার চাহনিতে দেখতে পাই। 

  • ফিলিস্তিনের শিশু থেকে ইহুদি নারীর গান সবই যেন তোমার ঠোঁটের অলঙ্ঘনীয় অলঙ্কার।

  • বিপন্ন সভ্যতার শেষ পায়রার উড়ে যাওয়া বার্তায় যখন-

  • 'রাজনৈতিক' তোমার অর্থনৈতিক কৈফিয়ত জোরালো হয়, 

  • বাজারের কাছে নিজেকে বাজারি, 

  • আর ধর্মের কাছে অধার্মিক মনে হয়-

  • তখনও আমি তোমার চোখেই আমার নিবৃত্তি আর ভারসাম্য খুঁজে পাই৷ 

  • প্রেমিকার হাতের রূপক তড়িতের নির্মোহ স্পর্শ শেষে,

  • আমি তোমাকে আমার মাঝেই দেখি।

  • তুমিও এই কবিতা পড়ে ব্রহ্মপুত্রের তলদেশে দেড়শো বছর আগে ডুবে যাওয়া নববিবাহিত বরের বেশে আবিষ্কার করবে আমাকে। 

  • তোমার ঘোর আরও গাঢ় হবে, রাত গভীর হবে, কবিতা হবে নিঃশব্দ।

  • যেমন নিঃশব্দ কবিতাতেই তুমি আমাকে ধারণ করেছ অন্তঃস্থ কাসিদায়।

  • এরপর তুমি-আমিতে আর এক শুক্রও তফাত থাকে না।

  • -০-

  • লেখক, শিক্ষার্থী,গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। 

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password