ঢাকার অধিনস্তো তুরাগ নদীর তীরে ছোট্ট একটি গ্রাম বিরুলিয়া। একসময়ের জমিদার নলিনী মোহর সাহার কাছে থেকে ৮৯৬০ টাকা ৪ আনার বিনিময়ে রজনীকান্ত ঘোষ বিরুলিয়া জমিদার বাড়ি কিনেছিলেন। ১১ টি প্রাচীন স্থাপনার জন্য বিখ্যাত বিরুলিয়া গ্রামটি এখনো এর মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য ও আভিজাত্য বহন করে চলছে।
জমিদার রজনীকান্ত ঘোষের পুরনো ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ শহর দেশের বিভিন্ন জায়গায় কয়েকটি বাড়ি থাকলেও এখন প্রায় সবগুলোই অন্যের দখলে ১৯৬৪ সালের দাঙ্গার সময় বিরুলিয়া গ্রামের জমিদার বাড়ি ছাড়া রজনীকান্তের আর কোন সম্পত্তি অবশিষ্ট থাকে না এবং পরবর্তী সময়ে সকল পুরনো বাড়ি একজন ব্যবসায়ী কিনে নিলেও এখন সেগুলো বেদখল হয়ে গেছে।
এ গ্রামটির অধিকাংশ অধিবাসীই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। এখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি মন্দির। জমিদার দুর্গাপূজায় নিজ বাড়ির উঠোনে মেলার আয়োজন করতেন। বাড়িগুলোতে একসময় সদরঘর, বিশ্রামঘর, বিচারঘর, ঘোড়াশাল, পেয়াদাঘরসহ আরো কিছু ঘর ছিল। যেগুলো এখন অন্য কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।
একসময় এখানে বসবাস ছিল আদি ঢাকেশ্বরী বস্ত্রালয়ের কর্ণধারদের পূর্বপুরুষদের।এখানে কালের সাক্ষী হিসেবে গ্রামের শেষ মাথায় রয়েছে শতববর্ষী একটি বিখ্যাত বটগাছ।এই বটগাছটিরই ছবি বড় করে ঝোলানো আছে কলকাতায় অবস্থিত ভারত তথা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত আদি ঢাকেশ্বরী বস্ত্রালয়ের প্রধান শোরুমে।
ভাওয়াল রাজারও জমিদারি এবং অস্থায়ী বসবাস ছিল বিরুলিয়া গ্রামে। এছাড়াও এই গ্রামে বসবাস করতেন জমিদার তারক চন্দ্র সাহা, বনি বাবু, নিতাইবাবু।
এছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে কদর রয়েছে বিরুলিয়ার মিরচিনি মুরালির।এত ইতিহাসের সাক্ষী হয়েও দিন দিন যেন ইতিহাস থেকে মুছে যাচ্ছে বিরুলিয়া গ্রামের ইতিহাস।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন