মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধ পরিচালনার জন্য মুজিব নগর সরকার বাংলাদেশকে সর্বমোট ১১টি সেক্টরে ভাগ করে। ১টি সেক্টর ১০ নম্বর সেক্টরের কোন ভৌগলিক অবস্থান ছিলোনা। প্রধান সেনাপতির অধীনে নৌ বাহিনী ও পরে বিমান বাহিনী সংযুক্ত থাকে।
১-৯ সেক্টর ও ১১ সেক্টরে যুদ্ধরত বাঙ্গালী সিনিয়র মেজরদের স্বীকৃতি দিয়ে সেক্টর কমান্ডার ও সাব সেক্টর কমান্ডার নিয়োগ দেয়া হয়।এই নিয়োগ গুলো হয় জুলাই ১৯৭১।
ফর্মেশন কমান্ডার ,প্রধান সেনাপতি ও প্রধানমন্ত্রী-প্রতিরক্ষা মন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদের সাথে যৌথ সভায়। ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের পক্ষে এ সভা উদ্বোধন করেন।সেক্টর কমান্ডার ও বিগ্রেড ফোর্স গঠন ও কমান্ডার নিয়োগের সিদ্ধান্তে হয় এ সভাতেই।
সেক্টর -১ সেক্টর কমান্ডার : মেজর রফিকুল ইসলাম
সেক্টর-২ সেক্টর কমান্ডার: মেজর খালেদ মোশারফ
সেক্টর -৩ সেক্টর কমান্ডার :মেজর শফিউল্লাহ
সেক্টর-৪ সেক্টর কমান্ডার: মেজর সি, আর দত্ত
সেক্টর-৫ সেক্টর কমান্ডার :মেজর মীর শওকত আলী
সেক্টর-৬ সেক্টর কমান্ডার: স্ক্রোয়াডন লীডার খাদেমুল বাশার
সেক্টর-৭ সেক্টর কমান্ডার :মেজর নাজমুল হক
সেক্টর-৮ সেক্টর কমান্ডার: মেজর মঞ্জুর
সেক্টর-৯ সেক্টর কমান্ডার :মেজর জলিল
সেক্টর-১০: প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানী
সেক্টর-১১ সেক্টর কমান্ডার :মেজর আবু তাহের
এই সভায় তিনটি পূর্ণাঙ্গ বিগ্রেড গঠন করা হয়। তিনজন সিনিয়র মেজরের নামের আদ্যাক্ষর দিয়ে তিনটি বিগ্রেড গঠিত হয়।
- খালেদের নামে K Force এবং খালেদ অধিনায়ক ও sector-2 কমান্ডার
- শফিউল্লাহক নামে S Force এবং শফিউল্লাহ অধিনায়ক ও Sector-3 কমান্ডার
- জিয়ার নামে Z Force এবং জিয়া অধিনায়ক । কিন্তু কোন সেক্টরের দায়িত্ব মেজর জিয়াকে দেয়া হয়নি। সেক্টর -১ এর দায়িত্ব পান মেজর রফিকুল ইসলাম।
- শফিউল্লাহ, খালেদ, জিয়া, আবু ওসমান ১০ এপ্রিল ১৯৭১ থেকে স্বস্ব সেক্টরে কাজ করছিলেন। কিন্তু মুজিব নগর সরকার জুলাই’র সভায় সেক্টর পুনর্গঠন করেন ও দায়িত্ব বন্টন করে।জিয়াকে সেক্টরের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে শুধুমাত্র Z বিগ্রেড ফোর্স গড়ে তোলার দায়িত্ব দেন।
- ২ নং সেক্টর কমান্ডার ও কে ফোর্সের অধিনায়ক খালেদ মোশারফ যুদ্ধে মারাত্মক আহত হলে মেজর হায়দার ২নং সেক্টর কমান্ডার ও মেজর সালেক কে ফোর্সের অধিনায়ন হন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাঃ
২৫ শে মার্চ জিয়া পাকিস্তানি সেনা হিসেবে যে সকল বাঙালি চট্টগ্রামের রাস্তায় রাস্তায় বেরিকেড দিয়েছে তাদেরকে গুলি করেছে হত্যা করেছে। ২৬ তারিখও জিয়া পাকিস্তানি সেনাদের পক্ষে ছিল ২৭ তারিখের সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র নামাতে গেলে জনতার হাতে ধরা পড়ে সেখান থেকে রেডিও স্টেশনে নিয়ে আসি তখন বঙ্গবন্ধুর দেয়া স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করে ২৭ তারিখে।
তবে এর আগে ২৭ তারিখ দুপুর দুটো থেকে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ স্বাধীনতার ঘোষণা রেডিওতে প্রচার করতে থাকে। যেহেতু একজন সেনা অফিসার ঘোষণা দিলে যুদ্ধ যুদ্ধ মনে হবে এবং বাঙ্গালীদের সাথে যে সেনাবাহিনী আছে সেটা প্রচার হবে দেশের মানুষের আস্থা বিশ্বাস বাড়বে। আওয়ামী লীগ নেতা জহুর আহমেদ চৌধুরী তিনি এই পরামর্শ দেন। চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হান্নান সাহেব সর্বপ্রথম জাতির পিতার পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন এরপর একে একে অন্য নেতারাও পাঠ করেন।
- মেজর জিয়ার স্ত্রী খালেদা জিয়াকে কয়েকবার চেষ্টা করেও ভারতে নেয়া সম্ভব হয়নি। অথচ মেজর খালেদের স্ত্রী, মেজর শিশুর স্ত্রী সহ বেশ ক’জন বাঙ্গালী সেনা অফিসারদের স্ত্রীকে মুক্তিযোদ্ধারা জীবনের ঝুঁকি নিতে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু খালেদা জিয়াকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তিনি ক্যান্টনমেন্টেই অবস্থান করছিলেন এবং তিনি ভালো আছেন বলে জানিয়েছেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন