জীবনসঙ্গিনী

জীবনসঙ্গিনী

মেয়েটি গভীর রাতে ঘুম ভেঙ্গে বলেঃ- “আমার খুব ভয় করছে,তোমার বুকে একটু মাথা রাখি?”
.আর তার উত্তরে মেয়েটির স্বামী বলেঃ- “রাত দুপুরে ঢং ভালো লাগেনা।ভয় পেলে লাইট জ্বালিয়ে ঘুমাও।”
.আর কখনো যদি কোথাও ঘুরতে যেতে বলে।উত্তরে তার স্বামী বলেঃ- “তুমি বাচ্চা নও যে, হাতের আঙ্গুল ধরে তোমাকে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে নিয়ে পশুপাখি দেখাবো।”
.এইগুলা শুনে মেয়েটি অভিমানে বালিশে মুখ গুজে কাঁদে।
.
ছেলেটি একবার চিন্তা করেনা যে, সে যখন সারাদিন কাজে থাকে তখনও মেয়েটি একা বাড়িতে। আর তারই বাবা মায়ের সেবাই নিয়োজিত। ছেলেটি যখন কাজের শেষে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় গরম চায়ে চুমুক দেয়,তখন মেয়েটি রান্নাঘরে রান্না করতে গিয়ে হাতে ফোসকা পড়ে।
.
দিন শেষে রাতে যখন ছেলেটি বাড়ি ফিরে তখন তৃপ্তি নিয়ে খাবার খায়।আর তাকে জিজ্ঞেসও করেনা যে সারাটা দিন কেমন কাটলো? খাবার তৈরীর পিছনে কোন কষ্ট আছে কিনা।
.
আর ফোসকা পড়া হাতটি কাছে নিয়ে একটিবার মিছে মিছে ফুঁ দিয়েও বলেনা যেঃ “জাদুর পরশ দিয়ে দিছি,ভাল হয়ে যাবে।”
.ছেলেটি জানেনা এখানেও কত ভালবাসা লুকিয়ে আছে।
.
অনেক ছেলেরাই জানেনা যে তাদের স্ত্রী এমন অল্প স্বল্প ভালবাসার কাঙ্গাল। দিনের পর দিন, রাতের পর রাত মনের মনিকোঠায় স্বপ্ন সাজায় তাকে এমন করে একটু ভালবাসবে। দিন যায়,রাত পেরিয়ে ভোর হয়। স্বপ্নগুলো বুকের ভিতর ধুকরে ধুকরে আর্তনাদ করে কাঁদে।
.
অনেক ছেলেই জানেনা যে এমন অল্প স্বল্প ভালবাসার অভাবেও মেয়েরা পরকীয়ায় জড়াতে
পারে।
.
হে স্বামী,তুমি যখন কাজ শেষে বাড়ি ফিরে খাওয়ার পরেই নাক ডেকে ঘুমাও।বউকে মিষ্টি করে
দুটো কথাও বলোনা।আর সেখানে কেউ যদি তাকে ভালবাসার গল্প শুনায়,মেয়েটি তার প্রেমে পড়বে
নিশ্চিত।
.
পরকীয়ার অনেক কারনের মধ্যে সবচেয়ে বড় কারন মনের অমিল।শেষ অবধি ডিভোর্স পর্যন্ত গড়াতে পারে।
.
আমি মেনে নিচ্ছি যে পুরুষের দ্বায়িত্ব অনেক। অনেক প্রতিকূল অবস্থা তাকে মোকাবেলা করতে হয়। সব সময় মনে রোমান্টিকতা আসেনা। কিন্তু দুই মিনিটের মিষ্টি কথায় যদি একটি মেয়ে ভাল থাকে,থাকুকনা।
.
আর বউয়ের কাছে শেয়ার করলে
অবশ্যই সে বুঝবে। তোমাকে আরো সাহস জোগাবে। খারাপ পরিস্থিতী কাটিয়ে উঠার জন্য।
.
.তো যাই হোক, আমাদের বাড়ির কাছে এক নেশাখোর ছিলো।সারাদিন নেশা করতো আর বউকে ধরে ধরে মারতো। সারা এলাকার মানুষ জড়ো হয়ে যেত।
.
কত মানুষ বুঝাতো বউটিকে, “দিনের পর দিন নেশাখোরের মার খাওয়ার চেয়ে তাকে ছেড়ে চলে যা। নতুন করে বাঁচতে শেখ।”
.
বউটি তখন উত্তর দিতোঃ- “তোমরা তো শুধু আমার স্বামীর মারটাই দেখো,ওর ভিতরের ভালবাসাটা আমি দেখি।”
.
বাস্তবে একটি ভালবাসার নিদর্শন দেখার সৌভাগ্য হয়েছিলো আমার। একদিন তাদের বাড়ি গিয়েছিলাম নারকেল কিনতে।
তাদের গাছের নারকেল বিক্রি করতো।
.
গিয়ে দেখি বউটির জ্বর,আর নেশাখোর স্বামীটি বালতি দিয়ে পানি এনে মগ দিয়ে বউয়ের মাথায় পানি ঢালে।
.
আর সবচেয়ে খুশির খবর হলো যে, সেই নেশাখোরটি এখন
আর নেশা করেনা।একটা মুদির দোকান চালায়। তাদের এখন তিন ছেলে মেয়ে।
.
মেয়েরা এমনই যে, তিনবেলায় একবেলা কম খেলে কষ্ট পাবেনা।কিন্তু অবহেলা মেয়েরা সহ্য করতে পারেনা।
.
সর্বশেষে কথা একটাই, প্রিয়জনকে সময় দিন।শত
ব্যস্ততায় স্ত্রীকে একটু সময় দিন। সেতো আপনার অর্ধাঙ্গিনী, সারা জীবনের সঙ্গী। ভালবাসার
সূতোয় সারাজীবন বেঁধে রাখুন সেই মানুষটিকে😍😍😍
…….(সমাপ্ত)……..
গল্প : জীবনসঙ্গিনী

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password