কবি, সমাজ সংস্কারক,ব্রিটিশ বাংলার বাগ্মী ও ইসলাম প্রচারক মুনশী মেহেরুল্লাহ

কবি, সমাজ সংস্কারক,ব্রিটিশ বাংলার বাগ্মী ও ইসলাম প্রচারক মুনশী মেহেরুল্লাহ

"মুসলমান ঠিকই খাইতে জানে,কিন্তু তৈরী করতে জানে না। পান খাইয়া অজস্র পয়সা নষ্ট করিতে জানে,কিন্তু পানের বরজ তৈরী করা অপমানজনক মনে করে। এইভাবে অনুপ্রাণিত হয়ে পরাধীনতার শৃঙ্খল ছিঁড়েছি,সামাজিক মুক্তির সংগ্রাম করে চলছি জাতির অজ্ঞতা ও কুসংস্কার অন্ধকারকে বিদায় দিয়ে ধীরে ধীরে নব দিগন্তে হাঁটছি।"

-মুনশী মেহেরুল্লাহ।---

মুনশী মেহেরুল্লাহ ছিলেন কবি, সমাজ সংস্কারক,ব্রিটিশ বাংলার বাগ্মী ও ইসলাম প্রচারক। মুনশী মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ ঝিনাইদহে তৎতকালীন কালীগঞ্জ থানাধীন ঘোপ গ্রামে নানার বাড়িতে ২৬ শে ডিসেম্বর ১৮৬১ সালে জন্ম গ্রহণ করেন।পৈতৃক নিবাস যশোর সদর উপজেলার চূড়ামনকাঠির ছাতিয়ান তলায়।তার পিতার নাম মুনশী মোহাম্মদ ওয়ারেস উদ্দীন।

শৈশবেই তিনি পিতাকে হারান। মায়ের প্রভাবে পড়াশোনা এবং জ্ঞান চর্চায় প্রবল ইচ্ছে শক্তি ছিলো আজন্ম। ফলে ছোটবেলায় তিনি দুই মহানুভব ব্যাক্তির আশ্রয়ে থেকে আরবি, ফারসি ও উর্দু ভাষা রপ্ত করেন। তাছাড়া তিনি ধর্ম বিষয়ে অধিকতর জ্ঞানার্জনের ক্ষেত্রে সব সময় সচেষ্ট থাকেন। জীবিকা হিসেবে দর্জির কাজ করেন এবং সেখানেও তিনি অল্প বয়সেই দক্ষতা ও সফলতা অর্জন করেন। এসময়ে চারপাশে খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচার তাকে প্রভাবিত করে।

অনেকেই খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহণ করেন। কিন্তু মেহেরুল্লাহ ধর্মান্তর না হয়ে বরং ইসলাম প্রচার করেন এবং ইসলামের মাহাত্ম্য চারিদিকে বর্ণনা করেন।এমনকি মুনশী মেহেরুল্লাহ তার পাশের গ্রামেও ইসলামি শিক্ষা প্রচার করেন এবং দিশেহারা মুসলিম সম্প্রদায়কে মুক্ত করতে "মাদ্রাসায়ে কারামিতিয়া" নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন।

বর্তমানে এই মাদ্রাসা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়।ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য ১৮৮৯ সালে "ইসলাম ধর্মোত্তেজিকাসভা" নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। তিনি অনেক গ্রন্থ লিখেছেন এবং মুসলমানদের আলোর পথেই ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন।সর্বোপরি আলোকিত মানুষ হয়ে শিক্ষা সাহিত্য সংস্কৃতি ছাড়াও সামাজিক মুক্তি নিয়ে ভেবেছেন। মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ ১৯০৭ সালে ৭ জুন শুক্রবার মাত্র ৪৭ বছর বয়সে মারা যান।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password